সিলেটে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)-এর কর্মকর্তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ভোরেই অভিযুক্ত রহিম উদ্দিন রাজু (৩৩) কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় তার সাথে ছাত্রলীগের কেন্দ্রিয় সদস্য’ লেখা একটি ভিজিটিং কার্ড উদ্ধারের কথা জানিয়ে পুলিশ বলছে- কার্ডটির ব্যাপারে যাছাই বাছাই চলছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সিআইডি ও মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
এরআগে সোমবার মধ্যরাতে নগরের সাগরদীঘিরপাড় এলাকায় সাইবার মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে ধরতে হামলার শিকার হন সিআইডির উপপরিদর্শক মো. খোরশেদ আলম। তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় আসামি। এ ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন রাজুকে ভোরেই আটক করে পুলিশ ও সিআইডির যৌথ দল।
পুলিশ বলছে, সাদাপোশাকে অভিযান পরিচালনার সময় ওই ব্যক্তি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। তাকে আটক করতে এগিয়ে গেলে তিনি ধারালো একটি ছুরি দিয়ে সিআইডি কর্মকর্তা খোরশেদ আলমকে আঘাত করে দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে আহত কর্মকর্তাকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একই রাতে তার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে এবং তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ও সিআইডি একাধিক দল অভিযান শুরু করে। মঙ্গলবার ভোররাতে এয়ারপোর্ট থানার মজুমদারী এলাকার একটি মেসে অভিযান চালিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আটক করা হয়। আটককৃত রহিম উদ্দিন রাজু (৩৩) সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার পশ্চিম কোনাগ্রাম এলাকার রফিক উদ্দিনের ছেলে। তিনি বর্তমানে সিলেট নগরীর শাপলাবাগ এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
পুলিশ জানায়, আটককৃত ব্যক্তির দেহ তল্লাশিতে তার কাছে একটি ভিজিটিং কার্ড পাওয়া যায়, যেখানে তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য হিসেবে পরিচয় উল্লেখ রয়েছে।
এ ব্যাপারে দুুপরে সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির ডিআইজি ড. মো. আল মামুনুর আনসারী ব্রিফিংয়ে জানান, আটককৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে পূর্বে বিভিন্ন থানায় মোট ছয়টি মামলা রয়েছে—যার মধ্যে কোতোয়ালী থানায় একাধিক এবং শাহপরাণ থানায় চুরি ও মারপিটসংক্রান্ত মামলা রয়েছে। এছাড়া পূর্বের এক মামলার বাদীর ছবি সম্পাদনা করে অসদুপায় অবলম্বন এবং হয়রানির অভিযোগেও তিনি অভিযুক্ত বলে সিআইডি জানায়।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের ওপর এ ধরনের হামলা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, রাজু মোটরসাইকেলে ওঠার সময় সিআইডির সদস্যরা তাকে আটক করার চেষ্টা করলে তিনি পকেট থেকে ছুরি বের করে উপপরিদর্শক খোরশেদ আলমকে আঘাত করেন। এরপর তিনি দৌড়ে পালিয়ে গিয়ে পুনরায় মোটরসাইকেলে উঠে এলাকা ত্যাগ করেন। পরে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
মন্তব্য করুন