টুডে সিলেট ডেস্ক
প্রকাশ : Jul 10, 2025 ইং
অনলাইন সংস্করণ

নবীগঞ্জে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার, সাংবাদিকসহ ৩২ জনের নামে মামলা

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ::হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ পৌর এলাকায় দুই সাংবাদিকের বিরোধকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ভয়াবহ সংঘর্ষের পর টানা তিনদিন ১৪৪ ধারা জারি থাকায় জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছিল। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এর ফলে ধীরে ধীরে শহরে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরতে শুরু করেছে। কিছু দোকানপাট খুলছে, সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে, তবে সাধারণ মানুষের মধ্যে এখনও আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট।

জানা গেছে, সংঘর্ষে জড়িত ৭টি গ্রামে এখনও জনশূন্য অবস্থা বিরাজ করছে। পুর্ব তিমিরপুর, পশ্চিম তিমিরপুর, চরগাঁও, আনমনু, রাজাবাদ, নোয়াপাড়া ও পিরিজপুর গ্রামগুলোতে যৌথবাহিনীর টহল ও চিরুনি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এ ঘটনায় নবীগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই রিপন দাশ বাদী হয়ে বুধবার (৯ জুলাই) রাতে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং ১০, তারিখ: ০৯/০৭/২০২৫)। মামলায় ৬ জন সাংবাদিকসহ ৩২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৪-৫ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।

এ পর্যন্ত পুলিশ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামান। তিনি জানান, পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে, তবে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

অন্যদিকে, চলমান বিরোধ মীমাংসার লক্ষ্যে বুধবার বিকেলে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি বাজার হাফিজিয়া সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসায় এক সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট সালিশ কমিটি ও একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়। সভায় ৫টি বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে—সালিশ বোর্ড গঠন, উভয় পক্ষের সম্মতি গ্রহণ, প্রশাসনের সাথে সমন্বয়, সংঘর্ষে নিহত ফারুক মিয়ার প্রতি শোক প্রকাশ এবং নিরীহ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিতকরণ।

প্রসঙ্গত, স্থানীয় দুই সাংবাদিক সেলিম তালুকদার ও আশাহিদ আলী আশার মধ্যে পারস্পরিক কটুক্তিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সূচনা হয়। প্রথমে পূর্ব তিমিরপুর ও আনমনু গ্রামের মানুষ সংঘর্ষে জড়ায়, পরে তা ছড়িয়ে পড়ে আরও পাঁচ গ্রামে। সংঘর্ষটি শেষে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে রূপ নেয়—সেলিম তালুকদারের পক্ষে অমৎস্যজীবী সম্প্রদায় ও আশাহিদের পক্ষে মৎস্যজীবী সম্প্রদায় অবস্থান নেয়।

গত সোমবার নবীগঞ্জ বাজার এলাকায় কয়েক ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে এম্বুলেন্স চালক ফারুক মিয়া (৪২) নিহত হন। আহত হন শতাধিক মানুষ। ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন ও একটি বেসরকারি হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল।

পরিস্থিতি সামাল দিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রুহুল আমীন পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন, যা তিন দিন পর  প্রত্যাহার করা হয়।

নবীগঞ্জের মানুষ এখন শান্তির প্রত্যাশায় বুক বেঁধেছে—আশা করা হচ্ছে সালিশ কমিটির উদ্যোগে এ বিরোধের স্থায়ী সমাধান আসবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দরপত্র সম্পন্ন হওয়ার আগেই পশুর হাট দখল, ছাড় দেবে না সিসিক

1

সিলেটে শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশের খবরে আনন্দ মিছিল

2

অবিবেচনাপ্রসূতভাবে ভ্যাটের হার বাড়ানো হয়েছে: দেবপ্রিয়

3

নির্বাচন প্রতীকের তালিকায় যুক্ত হলো ‘শাপলা কলি’

4

সিলেট সীমান্তে কারফিউ জারি করল ভারত

5

পালাতক মেয়র আনোয়ারজ্জামানকে আসামী করে আরেকটি মামলা দায়ের

6

৪৩তম বিসিএসের ২২৭ জনের প্রজ্ঞাপন হয়নি এখনো, রোববারের মধ্যে প

7

দল নিষিদ্ধের বিধানসহ সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশ জারি সোমবার

8

শাল্লা মৎস্য অফিসেই সহকারীর ঝুলন্ত লাশ উ দ্ধার

9

দক্ষিণ সুরমায় যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সভাপতি এম এ মালিকের উদ্যোগ

10

জগন্নাথপুরে বাস খাদে পড়ে আহত ৮, প্রাণে রক্ষা পান যাত্রীরা

11

ছাতকে মঈনপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে গাছের

12

নির্বাচন সামনে—এক ঝটে সিলেটসহ দেশে ১৬৬ ইউএনও বদলি

13

লন্ডনে সুনামগঞ্জ জেলা ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন ইউকের দ্বিবার্ষিক

14

৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ পালনের ঘোষণা

15

মিরাবাজারে আবাসিক হোটেলে অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে নারী

16

তাহিরপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে দুইজন গ্রেফতার

17

কোম্পানীগঞ্জে পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

18

আবাসিক হোটেলে অনৈতিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে আটক-৬

19

আ’লীগ নেতার বাসায় গৃহকর্মীর ঝুলন্ত লা শ

20