অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি মামলা দায়ের করেছে। সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার আদেশ জারি হওয়ার পরও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিবরণী দাখিল না করায় দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ধারায় এই মামলা করা হয়।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রাফি মোহাম্মদ নাজমুস সাদাত মামলা নং-০৪ (সিলেট মহানগর) দায়ের করেন।
দুদকের এজাহার সূত্রে জানা যায়, সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে প্রায় আট মাস সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসি-র পরিচালক পদে দায়িত্বে ছিলেন।
অনুসন্ধানকালে নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত তার নির্বাচনী হলফনামা বিশ্লেষণে লন্ডনে তার নামে থাকা ৪,০০০ বর্গফুটের বাড়ি ও ১,৮০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাটের তথ্য গোপনের সত্যতা পাওয়া যায়। একইসঙ্গে পূর্বাচলে রাজউক বরাদ্দকৃত ৫ কাঠা জমির তথ্যও হলফনামায় উল্লেখ করা হয়নি।
দুদক জানায়, ২০২২-২০২৫ অর্থবছরের আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী আনোয়ারুজ্জামানের ঘোষিত মোট সম্পদের পরিমাণ ৮৪,৪৪,০৯৮ টাকা। কিন্তু এই টাকা কীভাবে অর্জিত হয়েছে তার কোনো গ্রহণযোগ্য দালিলিক প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পারিবারিক ব্যয় ১৩,২৫,০০০ টাকা এবং মেয়র হিসেবে বেতন-ভাতা বাবদ ১০,৫৩,০০০ টাকার তথ্য গ্রহণযোগ্য হলেও তার মোট অগ্রহণযোগ্য নীট সম্পদ দাঁড়ায় ৯৩,৪৪,০৯৮ টাকা। যা অবৈধভাবে অর্জিত বলে দুদক প্রাথমিকভাবে মনে করছে।
সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ প্রদানকালে দুদক কর্মকর্তারা তার বাসা তালাবদ্ধ দেখতে পান। নিয়ম অনুযায়ী উপস্থিত সাক্ষী রেখে বাসার গেটে সম্পদ বিবরণীর মূল ফরম ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয়রা জানান, তিনি বর্তমানে ওই ঠিকানায় থাকেন না এবং তার স্থায়ী আবাস ও ব্যবসা লন্ডনে।
মামলার বিষয়ে দুদক সিলেট কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রাফি মোহাম্মদ নাজমুস সাদাত জানান, নির্ধারিত সময়ে সম্পদের তথ্য না দেয়ায় কিংবা সময় বৃদ্ধির আবেদন না করায় কমিশনের অনুমোদনের ভিত্তিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলাটি (নন-সাবমিশন) দায়ের করেছেন।
তিনি জানান, বিধি অনুযায়ী তদন্ত ও পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এর বাইরে আর কোন মন্তব্য করতে তিনি রাজী হননি।
মন্তব্য করুন