অজিত কুমার দাশ,সুনামগঞ্জ,প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলায় আশির দশকে এরশাদ সরকারের সময় বিচার বিভাগীয় সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে নির্মিত হয়েছিল ছাতক উপজেলা আদালত ভবন (কোর্ট বিল্ডিং)। কিছুদিন ওই ভবনে বিচারিক কার্যক্রম চালু থাকলেও পরে তা জেলায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর ভবনটি বিভিন্ন সরকারি অফিসের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার শুরু হলেও বর্তমানে তা জলাবদ্ধতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
প্রথম দিকে এ ভবনে উপজেলা নির্বাচন অফিস, সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়, যুব উন্নয়ন দপ্তর, সহকারী সেটেলমেন্ট অফিস, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) আঞ্চলিক কার্যালয় ও দলিল লেখক সমিতির কার্যক্রম চলছিল। তবে ভবনের অবস্থার অবনতি এবং নিম্নতল ভূমির কারণে বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই এখানে হাঁটু সমান পানি জমে যায়, ফলে একে একে চারটি সরকারি অফিস অন্যত্র স্থানান্তরিত হয়ে গেছে।
বর্তমানে শুধুমাত্র উপজেলা নির্বাচন অফিস এবং দলিল লেখকদের সেডটি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ভবনের চারপাশে ঝোপঝাড় ও জঙ্গল ছড়িয়ে পড়ায় সেখানে সাপ ও অন্যান্য জীবজন্তুর ভয় সৃষ্টি হয়েছে। জনসাধারণের চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। অফিসগুলো স্থানান্তরিত হওয়ায় সেবা প্রত্যাশীদেরকে নানা হয়রানি ও ভোগান্তির মুখোমুখি হতে হচ্ছে।
২০২৩ সালের এপ্রিল মাস থেকে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ভবনটি ছেড়ে দিয়ে বাইরে ভাড়া ভবনে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এতে মাসিক প্রায় ৩৫ হাজার টাকা করে সরকারি রাজস্ব ব্যয় হচ্ছে, বছরে যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। এতে করে সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে এবং রাজস্ব খাতে ক্ষতি হচ্ছে কোটি টাকারও বেশি।
উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মো. সাইফুল আলম বলেন, “ভবনটির অবস্থা দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। প্লাস্টার ঝরে পড়ে মানুষের জন্য নিরাপত্তা হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ করা হলে আমরা এখানেই সরকারি ভবনে ফিরে আসতে পারতাম এবং সরকারি অর্থের অপচয় রোধ হতো।”
এ বিষয়ে ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বলেন, “ভবনটি দীর্ঘদিন অবহেলায় পড়ে থাকায় বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। আমি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি এবং দ্রুত সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এলাকাবাসীর মতে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হলে ভবনটি পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী হয়ে উঠবে এবং সরকারি রাজস্ব সাশ্রয় হবে।