দলীয় নেতাকর্মীদের না জানালেও দেশত্যাগের আগে ঠিকই আত্মীয়-স্বজনকে ইংরেজিতে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এতদসংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন সামনে এনে এই মন্তব্য করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাবেক প্রেস সচিব জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক মারুফ কামাল খান।
বুধবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ মন্তব্য করেন তিনি।মারুফ কামাল খান বলেন, ‘শেষ রক্ষা হচ্ছে না, এটা নিজে বুঝতে পারলেও হাসিনা তার দলের আর কাউকে তা বুঝতে দেননি। বিভিন্ন বাহিনীতে ও প্রশাসনে যারা তার লেঠেল হয়ে কাজ করেছে, বুঝতে দেননি তাদেরকেও। তিনি কেবল ভেবেছেন তার নিজের ও নিকট স্বজনদের নিরাপত্তার কথা।’মারুফ কামাল খান তার পোস্টে লেখেন, ‘ছলে-বলে-কলে-কৌশলে টানা সাড়ে পনেরো বছর রাষ্ট্রক্ষমতা করায়ত্ত রেখেছিলেন। তবে শেষ অব্দি ছাত্র-তরুণরা এমন আন্দোলন গড়ে তোলে এবং তাতে সব শ্রেণির লোক শামিল হয়ে যায়। গুলি করে মানুষ মেরে এ আন্দোলন রাখার চেষ্টায় সেনারা সায় না দিয়ে বেঁকে বসে। হাসিনা বুঝে যান তার খেল খতম। তারপরেও কয়েক ঘণ্টা স্নায়ুর যুদ্ধ চালান এবং সেই ফাঁকে পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয়ের বন্দোবস্ত সেরে নেন।
তিনি বলেন, নিজে নিরাপদে পালাবার বন্দোবস্তের পাশাপাশি তিনি ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন ও বংশের লোকদের দেশ ছেড়ে পালাতে বলেছেন। এই গ্রুপ মেসেজ ছাড়াও তিনি (শেখ হাসিনা) তাদের (আত্মীয়-স্বজন) সবাইকে আলাদা করেও বার্তা দিয়েছেন। একটি ভুল ইংরেজি বাক্যে সবাইকে দেশত্যাগের নির্দেশনা সম্বলিত ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েছেন। লিখেছেন, ‘নো ওয়ান স্টে হিয়ার।’
এই সংবাদ এই বার্তাই দিচ্ছে স্বজন-পরিজন ছাড়া আর কারো প্রতি হাসিনার সামান্যতম মায়া ও কর্তব্যবোধও নেই। তবুও তিনি তাদের ওপর ভর করে হারানো স্বর্গ ফিরে পেতে চান, রাজনীতি করতে চান, দেশে ফিরতে চান, ভয়ঙ্কর সব অপরাধের দায় থেকে মুক্তি পেতে চান। এসব লক্ষ্য অর্জনে রোজ হাসিনা রোজই নেতাকর্মী ও অনুগতদের উস্কানি দিচ্ছেন, তাদেরকে প্ররোচিত করছেন ঝুঁকি নিতে। তাদের কয়জন সাড়া দেবে হাসিনার আগুন-খেলার ডাকে? যোগ করেন মারুফ কামাল খান।
প্রসঙ্গত, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করে হেলিকপ্টারে দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এ সময় তার সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানা ছিলেন। এরপর থেকে হাসিনা ভারতেই অবস্থান করছেন।
মন্তব্য করুন