সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের ফাজিলপুর এলাকায় কুশিয়ারা নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত খসরুপুর–বালাগঞ্জ সড়ক ও একটি সেতু পরিদর্শন করেছেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। শনিবার (১০ মে) বিকেল ৪টায় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে যান।
পরিদর্শনকালে কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, “ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার শুধু মেগা প্রকল্পের নামে দুর্নীতির মহোৎসব চালিয়েছে। দেশের জনগণের উন্নয়ন নয়, বরং নিজেদের পকেট ভারী করাই ছিল তাদের একমাত্র লক্ষ্য। অথচ বিএনপি সরকারের আমলে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছিল। বিএনপি আগামীতে রাষ্ট্রক্ষমতায় এলে কুশিয়ারা নদীর ডাইক টেকসইভাবে নির্মাণ করা হবে ইনশাআল্লাহ।”
এর আগে, গত ৬ মে রাতে কুশিয়ারা নদীর তীব্র ভাঙনে ফাজিলপুর–পৈলনপুর এলাকার প্রায় ৩০০ মিটার সড়ক এবং একটি সেতু ধসে পড়ে। এতে প্রায় পাঁচ ফুট গভীর একটি গর্তের সৃষ্টি হয়। ফলে আশপাশের কয়েকটি গ্রাম মূল সড়ক যোগাযোগ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। স্থানীয়রা জানান, এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কোনো দপ্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেননি।
ভাঙনপ্রবণ এলাকায় বসবাসকারী ক্ষতিগ্রস্তদের ঘরবাড়ি স্থানান্তরের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কাইয়ুম চৌধুরী। তিনি বলেন, “বিলম্ব হলে ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাই সময়ক্ষেপণ নয়, জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই সড়কটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে। দ্রুত ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বিকল্প সড়ক নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।”
পানি উন্নয়ন বোর্ড, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল বিভাগের উদ্দেশে তিনি বলেন, “ভবিষ্যতের আশ্বাসে নয়, এখনই কাজ শুরু করতে হবে। বর্ষাকাল সামনে—তাই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হওয়ার আগেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।”
গত বছরের বন্যার পর ভাঙনপ্রবণ এলাকায় যেভাবে দায়সারা মেরামতকাজ করা হয়েছিল, সে প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “তখনকার সময়ে নির্মিত এই সড়কে বারবার ভাঙন ও ধস শুধু জনদুর্ভোগই বাড়ায়নি, সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা ও ক্ষোভ—দুটিই বাড়িয়েছে।”
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “দ্রুত ও টেকসই ভাঙনরোধী ব্যবস্থা না নিলে এই অঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থা ও মানুষের জীবন-জীবিকা চরম হুমকির মুখে পড়বে।”
পরিদর্শনের সময় বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, জেলা বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক মাহবুব আলম, সহ-প্রচার সম্পাদক শাহিন আলম জয়, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি জিতু মিয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সেফুল সহ স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন