সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের ছাতকে পতিত সরকারের উলামালীগ এর শীর্ষ নেতা হাসান আহমেদ ওরফে দুদু মিয়া কর্তৃক মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরপরাধ ব্যক্তিদের হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের নয়া লম্বাহাটি গ্রামের মৃত মদরিছ আলীর ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী হুসাইন আহমদের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তারই ভাগনা স্থানীয় হাসনাবাদ গ্রামের হাফেজ মখলিছুর রহমানের ছেলে লুৎফুর রহমান।
গতকাল বুধবার বিকেল ৩টায় গোবিন্দগঞ্জে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, নয়া লম্বাহাটি গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে, ছাতক উপজেলার উলামালীগের শীর্ষ নেতা হাসান আহমেদ ওরফে দুদু মিয়া পতিত সরকারের আমলে স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের ক্ষমতার বলে থানার পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার, মামলা দিয়ে হয়রানি ও ভয় দেখিয়ে অবৈধ টাকার মালিক হয়ে এলাকায় রাম রাজত্ব কায়েম করছেন। ডেভিল হাসান আহমেদ ওরফে দুদু নিজেকে আলেম পরিচয় দিলেও সুদের মতো জঘন্য কাজের সাথে সে জড়িত। তাছাড়া হাসনাবাদ খাদিমুল ইসলাম পরিষদের অর্থ আত্মসাত করাসহ নানান অভিযোগে অভিযুক্ত এই ডেভিল দুদু। সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, হুসাইন আহমদ অসুস্থ্য হয়ে সৌদি আরব থেকে দেশে আসেন চিকিৎসার জন্য। তার একটি চোখে অপারেশন করে বাড়িতে বেড রেষ্টে আছেন। গত ৭জুন ঈদুল আযহার দিন গ্রামের জামে মসজিদে ঈদের জামাত শেষে অন্যান্য মুসল্লিদের সাথে বাড়ি ফিরছিলেন। হঠাৎ পিছনে শোর চিৎকার শুনে অন্যান্য লোকদের সাথে তিনি সেখানে ছুটে যান। গিয়ে দেখেন গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে আমির হোসাইন নাঈমকে মারধর করছেন গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে, উলামালীগ নেতা হাসান আহমেদ ওরফে দুদুসহ তার ভাইয়েরা। এতে সে আহত হয়। আমিসহ আমিনুল হক, সুনু মিয়া, নুরুল আমীনসহ গ্রামের লোকজন তাৎক্ষনিক সালিশ করে তাদেরকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, দুদু মিয়া ও আমির হোসেন নাঈম সম্প্রতি গোবিন্দগঞ্জে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পার্টনার ছিলেন। পার্টনার হওয়ার তিন দিনের মাথায় বিভিন্ন কূটকৌশল করে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি দখল করেন দুদু মিয়া। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ছিল। ঈদের জামাত শেষে বাড়ি যাওয়ার পথে দুদু মিয়াকে দেখে সালাম দিয়ে কূশল বিনিময় করতে এগিয়ে যায় নাঈম। কিন্তু হাত মিলানোর আগেই তার পাঞ্জাবীর কলারে ধরে মারধর শুরু করে দুদু। এসময় দুদুর পক্ষ নিয়ে তার ভাই ইব্রাহিম, চাচাতো ভাই আলমগীর, জাহেদ, ইমরান ও আমিন উদ্দিনরা তাকে লাঠিসোটা দিয়ে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে মাটিতে ফেলে আঘাত করে।
এঘটনায় আহত আমির হোসাইন নাঈম ঈদের দিন দুপুরে ছাতক থানায় মামলা দায়ের করতে বাড়ি থেকে বের হন। স্থানীয় হাসনাবাদ বাজারে পৌঁছলে হাসান আহমেদ ওরফে দুদু মিয়া তাকে পথরোধ করলে স্থানীয় লোকজনের ধাওয়া খেয়ে পলায়ন করতে গিয়ে দুদু মিয়ার মাথায় কিছুটা আঘাত লাগে। এ ব্যাপারে আমির হোসাইন নাঈম ছাতক থানায় একটি মামলা দায়ের করলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। এদিকে, উলামালীগ নেতা হাসান আহমেদ ওরফে দুদু মিয়া বাদি হয়ে সুনামগঞ্জ আদালতে আমিসহ আমার দুই ভাই আবুল হোসেন ও খুশিদ আলী এবং গ্রামের নিরপরাধ, সালিশ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা হয়রানিমূলক পৃথক মামলা দায়ের করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ঝগড়া লেগেছে নাঈম ও দুদু, আমরা নিরিহ মানুষ। সত্য কথা বলায় এবং সালিশ করায় অহেতুক হয়রানির উদ্দেশ্যে এই প্রভাবশালী উলামালীগ নেতা উঠেপড়ে লেগেছে। পঞ্চায়েতের রাস্তায় চলাচলে বাঁধা দিচ্ছে। মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে হয়রানির উদ্দেশ্যে দায়ের করা মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি জোর দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ভূক্তভোগি সৌদি আরব প্রবাসী হুসাইন আহমদ, আবুল হোসেন, খুশিদ আলী প্রমুখ।
মন্তব্য করুন