ডেস্ক রিপোর্ট : ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ’ কেয়ারে অবৈধভাবে অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচার চালানো, ভবঘুরে ও ছিন্নমূল মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পাচার এবং নিজের প্রতিষ্ঠানের নামে জমি দখলসহ নানা অভিযোগ ও মামলার প্রেক্ষিতে গ্রেপ্তার হয়েছেন আলোচিত-সমালোচিত সমাজকর্মী মিল্টন সমাদ্দার।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাজধানীর মিরপুরে তার নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন ডিবি প্রধান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, ‘মিল্টন সমাদ্দারের সংস্থার অপারেশন থিয়েটারের লাইসেন্স ছিল না। সেখানে অবৈধভাবে অপারেশন করা হতো।
হারুন অর রশীদ আরও বলেন, ‘বরিশালের উজিরপুরের মিল্টন সমাদ্দারের উত্থান নিজ বাবাকে পিটিয়ে। এই অপরাধে এলাকাবাসী তাকে বাড়িছাড়া করেন। এরপর ঢাকার শাহবাগে এসে একটি ফার্মেসিতে কাজ শুরু করেন তিনি। ওষুধ বিক্রির টাকা চুরি করায় সেখানেও বেশি দিন টিকতে পারেননি মিল্টন। এরপর মিঠু হালদার নামের এক নার্সকে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর ওল্ড অ্যান্ড চাইল্ড নামের একটি কেয়ার সেন্টার স্থাপনের স্বপ্ন দেখেন তারা। পরবর্তীতে মিরপুর এলাকায় চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার নামের একটি কেয়ার সেন্টার স্থাপন করেন। তিনি খুঁজে খুঁজে গরিব, বৃদ্ধ এবং শিশুদের সেখানে নিয়ে আসতেন। বিভিন্ন মিডিয়ায় তিনি জানিয়েছে, তার কেয়ার সেন্টারে অপারেশন থিয়েটার আছে এবং সেখানে তিনি মানুষের সেবা প্রদান করেন। অপারেশন থিয়েটার থাকলে তো, লাইসেন্স থাকতে হবে। তার লাইসেন্স ছিল না।’
পুলিশের এ অতিরিক্ত কমিশনার আরও বলেন, ‘মিল্টনের বিরুদ্ধে আমরা অজস্র অভিযোগ পেয়েছি। তিনি বলেছেন তার দুটি আশ্রম রয়েছে। সাভারের আশ্রমে ৫ থেকে ৭ শত লোক রয়েছেন। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেখানে ২০ থেকে ৩০ জনের বেশি লোক নেই। আমরা তাকে নিয়ে এসেছি। কিছু অভিযোগকারী রয়েছে তারাও মামলার রুজু করবেন। আমরা মিল্টনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করব-কত সংখ্যক মানুষ তার কাছে আশ্রয়ের জন্য গিয়েছিল, কত সংখ্যক মানুষ মারা গেল। তার আশ্রমে যে অপারেশন থিয়েটার রয়েছে, এর মাধ্যমে কিডনি বিক্রি করেছেন কি না, সেটাও তদন্ত করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘মিল্টন সমাদ্দার নিজেই কেন ডেথ সার্টিফিকেট নিজের সাক্ষরে তৈরি করেছেন এবং সেখানে ডাক্তারের কোনো সিগনেচার কেন নেন নাই, সেগুলো খুঁজে বের করা হবে। আমরা সবকিছু তদন্ত করে পরবর্তীতে আপনাদেরকে জানাব। আমরা তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ পেয়েছি, সেগুলো তদন্ত করে তাকে রিমান্ডে নিয়ে পরবর্তী বিষয়গুলো জানাব।’