ইসলামে কুরবানি একটি মহান ইবাদত। কুরবানির মাধ্যমে মুসলমানরা হজরত ইবরাহীম (আ.)-এর আত্মত্যাগের মহান শিক্ষার অনুসরণ করে থাকে। তবে কুরবানি কবুল হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো—শরিয়তের নির্ধারিত নিয়ম মেনে কুরবানির পশু নির্বাচন করা। অনেক সময় অজ্ঞতা, অবহেলা বা হেলাফেলার কারণে এমন পশু কুরবানি করা হয়- যেগুলো শরিয়তসম্মত নয়। এতে যেমন কুরবানির উদ্দেশ্য বিফল হয়, তেমনি ইবাদতেও ঘাটতি থেকে যায়। তাই কুরবানির পশু নির্বাচনের সময় কিছু বিষয় অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে খেয়াল রাখা জরুরি।
৪. কান নেই বা ছোট কান রয়েছে এমন পশু নিয়ে বিভ্রান্তি
অনেকের ধারণা, পশুর কান ছোট হলে কুরবানি হয় না। অথচ শরিয়ত বলে, পশুর কান একেবারেই না থাকলে কুরবানি হবে না কিন্তু স্বাভাবিকভাবে ছোট কান থাকলে কুরবানি বৈধ। (বাদায়েউস সানায়ি, খণ্ড ৪)।
৫. গর্ভবতী পশু কিনে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়া
কোনো গাভি বা ছাগি গর্ভবতী হলে তা কুরবানি করা বৈধ। তবে জবাইয়ের পর যদি পেটে জীবিত বাচ্চা পাওয়া যায়, তাকেও আলাদা করে আল্লাহর নামে জবাই করতে হয়। (আল-মুগনী – ইবনে কুদামা; সহীহ বুখারী)।
৬. কুরবানির পশু হালালভাবে না কেনা
চুরি করা, আত্মসাত করা, জোর করে দখল করা বা অবৈধভাবে কেনা পশু দিয়ে কুরবানি করা সম্পূর্ণ হারাম। ( সহিহ বুখারী, হাদিস: ১৯৪০)।
৭. পশুর শরীরের চেহারা দেখে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস
কোনো পশু বাহ্যিকভাবে মোটা বা সুন্দর দেখালেই সে কুরবানির উপযুক্ত নয়। বয়স, স্বাস্থ্য, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, চোখ, দাঁত, লেজ ইত্যাদি দেখে নিশ্চিত হয়ে তবেই পশু নির্বাচন করতে হবে। (ইসলামিক ফাউন্ডেশন ফিকহ বিভাগ, কুরবানি নির্দেশিকা)
উপসংহার
কুরবানি হলো আত্মত্যাগ ও ইবাদতের এক অনন্য নিদর্শন। এটি কেবল পশু জবাই নয় বরং আল্লাহর আদেশ মেনে ত্যাগের অনুশীলন। তাই কুরবানির পশু নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের খুব সচেতন থাকা জরুরি। শরিয়তের নিয়ম-কানুন জানা এবং অনুসরণ করা আমাদের কুরবানিকে কবুল হওয়ার পথে সহায়ক করে তোলে। ভুল ও গাফিলতির কারণে যেন ইবাদতে ঘাটতি না হয়, সে জন্য প্রত্যেক মুসলমানকে কুরবানির পশু নির্বাচনে সতর্ক থাকতে হবে।
মন্তব্য করুন