দেখতে দেখতেই এখন পর্যন্ত দশটি আসর শেষ হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল)। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ৩০ ডিসেম্বর মাঠে গড়াবে বিপিএলের ১১তম আসর। বিসিবির সভাপতি হওয়ার পরেই ফারুক আহমেদ জানিয়েছিলেন, এবার নতুন আঙ্গিকে হবে বিপিএল।
এরই অংশ হিসেবে হিসেবে রবিবার (০১ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আয়োজন করা হয় ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ শীর্ষক এক জমকালো অনুষ্ঠান। বিপিএল আয়োজনে বিসিবির সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। সম্মিলিত ব্যবস্থাপনায় ‘বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ২০২৫’ এবং ‘তারুণের উৎসব ২০২৫’ আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল আগেই।
তরুণ ও যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করতে দেশব্যাপী এই আয়োজনের মিডিয়া লঞ্চিং প্রোগ্রামে উন্মোচিত হয় বিপিএলের নতুন মাসকট ও থিম সং।এর আগে প্রদর্শন করা হয় জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহীদদের সম্মানে নির্মিত প্রমাণ্য চিত্র ‘জুলাই-অনির্বাণ’।
মূল অনুষ্ঠানের আগেই উপস্থিত হন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি বিপিএলের এবারের আসর নিয়ে বিসিবি এবং সরকারের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করেন। তার নেতৃত্বে বিপিএলের ভেন্যুগুলোর সংস্কার এবং নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টার দিকনির্দেশনায় এবারের বিপিএল ঘিরে এমন আকর্ষণীয় আয়োজন সম্ভব হয়েছে।
এই আয়োজন পরিণত হয় সাবেক এবং বর্তমান ক্রিকেটারদের এক মিলনমেলায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের বর্তমান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল এবং মুশফিকুর রহিম। তাদের পাশাপাশি নারী ক্রিকেট দলের সদস্য, ফুটবল এবং অন্যান্য ক্রীড়া ফেডারেশনের কর্মকর্তারা ও খেলোয়াড়রা অনুষ্ঠানটিকে রঙিন করে তোলেন।
অনুষ্ঠানে শুরু থেকেই উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। তার নেতৃত্বে বোর্ডের অন্যান্য পরিচালক এবং সদস্যরা অনুষ্ঠানকে সফল করতে কার্যকর ভূমিকা রাখেন। অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিল বিপিএলের নতুন মাসকট ‘ডানা-৩৬’ উন্মোচন।
‘ডানা-৩৬’ মাসকটটি সাম্প্রতিক ছাত্র-নাগরিক আন্দোলন এবং রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে ডিজাইন করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনা এবং ক্রীড়ামোদীদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার প্রতীক হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। পায়রার আকৃতির এই মাসকটটি শান্তি, স্থিতিস্থাপকতা এবং জাতির শক্তি ও ঐক্যের প্রতীক।
অনুষ্ঠানে তারুণ্যের মধ্যে উদ্দীপনা ছড়াতে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয় কয়েকটি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের। তাদের অংশগ্রহণ পুরো আয়োজনকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
বিপিএলের এবারের আসর শুধুমাত্র মাঠের খেলা নয়, বরং মাঠের বাইরের আয়োজনেও দর্শকদের জন্য নতুন মাত্রা যোগ করবে। তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি দেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করতে এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে ২৩ ডিসেম্বর মিরপুর শের-ই বাংলায়। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ও সিলেটেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। ২৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে এবং ২৭ ডিসেম্বর সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে হবে এই অনুষ্ঠান।
প্রসঙ্গত, আগামী ৩০ ডিসেম্বর শুরু হবে ২০২৫ বিপিএলের আসর। প্রায় দেড় মাসব্যাপী টুর্নামেন্টটি শেষ হবে আগামী বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি। এবারের বিপিএলের ৭টি দল হচ্ছে— ঢাকা ক্যাপিটালস, চিটাগং কিংস, দুর্বার রাজশাহী, ফরচুন বরিশাল, খুলনা টাইগার্স, রংপুর রাইডার্স ও সিলেট স্ট্রাইকার্স।
বিশ্বক্রিকেটে গ্রহণযোগ্যতা তৈরির লক্ষ্যে এবারের আসরে ডিজিটাল টিকেটিং, গ্যালারিতে দর্শকদের জন্য বিনামূল্যে পানির ব্যবস্থা, উন্নত সব প্রযুক্তি, অভিজ্ঞ দেশি-বিদেশি আম্পায়ার এবং উদ্বোধনীতে বিশেষ চমক থাকবে বলে জানিয়েছে বিসিবি।