এখলাছুর রহমান:::
একজন পুলিশ অফিসারের কর্তব্য হচ্ছে দেশের মানুষের সেবা করা। তারা আইনকে সমুন্নত রাখা, শৃংখলা বজায় রাখা, অপরাধ প্রতিরোধ করা এবং যে কমিউনিটিতে তারা কাজ করে সে কমিউনিটির মানুষের নিরাপত্তা প্রদান করা। তারা জনগনের সাহায্যকারী, রক্ষক এবং বন্ধু হওয়া উচিত। মানুষ যখন তাদেরকে টহল দিতে দেখবে তখন তারা নিজেদেরকে নিরাপদ মনে করবে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে বাংলাদেশে তা দেখা যাচ্ছে না বরং বাস্তবে বাংলাদেশে ঠিক তার উল্টোটা দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশের পুলিশের নৈতিকতা এখন সর্বত্র প্রশ্নবিদ্ধ। গত ১৫ বছর বা তারও বেশী সময় ধরে এটি খারাপ থেকে আরো খারাপের দিকে গেছে। পুলিশকে নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের রাজনীতিকরণের কারণেই এমনটা হয়েছে। পুলিশ এখন জনগনের স্বার্থের চেয়ে আওয়ামী লীগের স্বার্থ রক্ষায় অনেক তৎপর। এটা সর্বজনবিদিত এবং সর্বজন স্বীকৃত যে আওয়ামী লীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মস্থান গোপালগঞ্জ জেলা থেকে শতশত এবং হাজার হাজার পুলিশ অফিসার নিয়োগ দিয়েছে। এসব নিয়োগ প্রাপ্তদের অধিকাংশই মূলতঃ আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের। তাদের অধিকাংশেরই আবার সহপাঠী ছাত্র-ছাত্রীদের নির্মমভাবে প্রহার, নির্যাতন, লাঞ্ছনা এমনকি হত্যা করার ট্রাক রেকর্ডও রয়েছে কারন ঐ সব ছাত্ররা আওয়ামী লীগের মতাদর্শের বিশ্বাসী না হয়ে তারা ভিন্ন মতাদর্শ ধারণ করত।
কার্যত, পুলিশ এখন আর জনগণের পুলিশ নয় বরং তারা আওয়ামী লীগের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং তারা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিরোধী দলের উপর চরম দমন-পীড়ন চালানো। পুলিশের সবচেয়ে জগন্য এবং অবমাননাকর প্রাকটিস হচ্ছে গুটি কয়েক ব্যক্তির নামে মিথ্যা, বানোয়াট এবং “গায়েবী” মামলা দায়ের করা এবং হাজার হাজার ব্যক্তিদের “অজ্ঞাতনামা“ আসামী হিসেবে সে সব মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা। এর ফলে কার্যত তারা যে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারে, গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করতে পারে, মামলায় অভিযুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও আটককৃতদের বারবার গ্রেপ্তার করতে পারে এবং জামিনের অনুরোধ ব্যর্থ করে দিতে পারে।
পুলিশের উপরোক্ত কর্মকান্ডের কারণে পুলিশের উপর সাধারন জনগণ খুবই ত্যক্ত বিরক্ত। তারা পুলিশকে আর তাদের বন্ধু, সাহায্যকারী কিংবা রক্ষক হিসেবে দেখে না বরং তাদেরকে টহল দিতে দেখলে তারা অনিরাপদ মনে করে, ভয় পায় এবং ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। বাস্তবতা হচ্ছে, এ অবস্থার উন্নতির কোন লক্ষণ নেই এবং মনে হচ্ছে এটাকে মেনে নিয়ে চলা ছাড়া আমাদের সামনে আর কোন বিকল্প নেই।