প্রতিনিধি ১১ মে ২০২৩ , ৭:৫৪:৩৯ প্রিন্ট সংস্করণ
ডেস্ক রিপোর্ট : দেশে এপ্রিল মাসে ৫২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৫২ জন নিহত ও ৮৫২ জন আহত হয়েছেন। ওই হিসেবে এপ্রিলে প্রতিদিন সড়কে ১৮ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথে দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৫২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৫২ জন নিহত হয়েছেন। এ সময়ে আহত হয়েছেন ৮৫২ জন। একই সময় রেলপথে ৪২টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত, ৬৭ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে ১০টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত, ১৬ জন নিখোঁজ হয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে মোট ৫৭৮টি দুর্ঘটনায় ৫৯৭ জন নিহত এবং ৯১৯ জন আহত হয়েছেন। এ সময়ে ২১৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৩১ জন নিহত, ১৭১ জন আহত হয়েছেন; যা মোট দুর্ঘটনার ৪০.৮৭%।
দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী চিত্র : সড়ক দুর্ঘটনায় এপ্রিল মাসে সিলেটে ২৬ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৬ জন। আহত হয়েছেন ৪৭ জন। এছাড়া ঢাকা বিভাগে ১৫৩ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৪৮ জন, চট্রগ্রামে ১০১ দুর্ঘটনায় নিহত ১০৩, রাজশাহীতে ৭১ দুর্ঘটনায় নিহত ৬৯, খুলনায় ৬২ দুর্ঘটনায় নিহত ৬৭, বরিশালে ৩৪ দুর্ঘটনায় নিহত ৩৮, রংপুরে ৪২ দুর্ঘটনায় নিহত ৫৩ এবং ময়মনসিংহে ৩৭ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৮ জন।
সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ১৬৩ জন চালক, ৯০ জন পথচারী, ৩৭ জন পরিবহন শ্রমিক, ৩২ জন শিক্ষার্থী, ৪ জন শিক্ষক, ২৫ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৭৩ জন নারী, ৬৩ জন শিশু, ১ জন সাংবাদিক, ৯ জন চিকিৎসক, ১ জন মুক্তিযোদ্ধা, ৩ জন আইনজীবী ও একজন প্রকৌশলী এবং ৮ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।
এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪ জন পুলিশ সদস্য, একজন আনসার সদস্য, একজন বিমানবাহিনীর সদস্য, ২ জন বিজিবি সদস্য, ১৪৪ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৭৮ জন পথচারী, ৪৭ জন নারী, ৪৩ জন শিশু, ৩০ জন শিক্ষার্থী, ২২ জন পরিবহন শ্রমিক, ৪ জন শিক্ষক, ৩ জন চিকিৎসক, একজন সাংবাদিক, ২ জন আইনজীবী, ১ জন প্রকৌশলী ও ৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪৮.৬৬% গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনা, ২২.৬২% মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬.৩৪% নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১১.৭৮% বিবিধ কারণে, ০.১৯% গাড়ির চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং ০.৩৮% ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ২৮.৫১% জাতীয় মহাসড়কে, ৩৪.২২% আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩০.৯৮% ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫.৭০% ঢাকা মহানগরীতে, ০.১৯% চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৩৮% রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে, দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেলের অবাধ চলাচল, ব্যাটারিচালিত ও ইঞ্জিনচালিত তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি, জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কে বাতি না থাকা, উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন ও অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রী বহন, বেপরোয়া যানবাহন চালানোর কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে।