সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জে পৃথক ধর্ষণ মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন

  প্রতিনিধি ৩ নভেম্বর ২০২২ , ৬:১৪:৩২ প্রিন্ট সংস্করণ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি: সুনামগঞ্জে চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্রী গণধর্ষণ মামলায় ৪ জনের এবং আরেকটি অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানার রায় দিয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (দায়রা জজ) মো. জাকির হোসেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে পৃথক দুটি মামলায় এই রায় ঘোষণা করেন তিনি।
জরিমানার টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে ভিকটিমরা পাবেন বলে রায়ের আদেশে বলা হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ৫ আসামিই আদালতে উপস্থিত ছিল। রায়ের বিষয়টি করেছেন, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পি.পি অ্যাড. নান্টু রায়। ধর্ষণ মামলার এই রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও মামলার বাদীপক্ষ খুশি বলে জানিয়েছেন তিনি। রায়ের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
গণধর্ষণ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামের আলী নূরের ছেলে আনোয়ার হোসেন খোকন (৩৭), সাহিদাবাদ গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে শফি উল্লাহ (৩০), জাবেদ মিয়ার ছেলে ছাইদুর রহমান (৩০), আব্দুল মজিদের ছেলে সফিকুল ইসলাম (৩০)। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাহিরপুর উপজেলার লাউড়েরগড় গ্রামের তিন আসামী সেলিম, আনোয়ারুল আজিম আকাশ ও মাফিনুরকে মামলা থেকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আনোয়ার হোসেন খোকন ২০১২ সালের ৩১ আগষ্ট দুপুরে বিশ্বম্ভরপুর দীগেন্দ্র বর্মন ডিগ্রী কলেজে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে পথ থেকে জোর করে মোটরসাইকেলে তুলে পাশ্ববর্তী তাহিরপুর উপজেলার শাহ আরেফিন মোকামে নিয়ে যায়। পরে ভয় দেখিয়ে আখক্ষেতে তাকে ধর্ষণ করে। এই সময় পাশে থাকা শফি উল্লাহ, সাইদুর রহমান ও শফিকুল ইসলাম রশি দিয়ে আনোয়ার হোসেনকে বেঁধে রেখে ওই কলেজ ছাত্রীকে পালাক্রমে গণধর্ষণ করে এবং গণধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। এই ঘটনায় পরদিন তিন শিশুসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে তাহিরপুর থানায় দায়ের করা হয়। পরে আসামী শফিকুল, শফি উল্লাহ ও ছাইদুর রহমান ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। দীর্ঘ শুনানী শেষে আদালত গতকাল রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামীরা আদালতে হাজির ছিল। তবে এই তিন শিশুকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এদিকে ২০১২ সালের ৩ মার্চ ছাতক উপজেলার মোহনপুর গ্রামের একটি অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় মশাহীদ আলীর ছেলে ইকবাল হোসেন (২৯) কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা ও অন্য আসামী মছদ্দর আলীর ছেলে জয়নাল আবেদীন (৪০) কে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানার রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার দণ্ডিত দুই আসামী আদালতে উপস্থিত ছিল।
একই আদালতের বিচারক ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর দিরাইয়ে যাত্রীবাহী বাসে আরেক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার মামলায় বাসচালক শহিদ মিয়া (৩৫) কে ৫ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার রায় ঘোষণা করেছেন। জরিমানার টাকা ক্ষতিপূরণ হিসাবে ভিকটিম পাবেন বলে রায়ের আদেশে বলা হয়েছে। তবে চালককের দুই সহযোগি রশিদ মিয়া ও আবু বকরকে মামলা থেকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত বাসচালক শহিদ মিয়া সিলেটের জালালবাদ থানার মোল্লারগাঁও গ্রামের মৃত তৌফিক মিয়ার ছেলে। পরে পৃথক তিনটি মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত ৭ আসামীকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

আরও খবর

Sponsered content