প্রতিনিধি ৩ নভেম্বর ২০২২ , ৬:০৯:১৫ প্রিন্ট সংস্করণ
দিরাই প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে বিদ্যালয়ের ভিতরে ঝুমা আক্তার (১৪) নামের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর বিষপান করে আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় উপজেলার ব্রজেন্দ্রগঞ্জ আরসি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনাটি ঘটে। সে চরনারচর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের নুর উদ্দিনের মেয়ে। অপর এক শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের শৌচাগারের পাশের সিঁড়িতে বসে ঝুমাকে বমি করতে দেখে শিক্ষকদের অবগত করে। পরে প্রধান শিক্ষক, কমিটির সভাপতি ও পরিবারের লোকজন চিকিৎসার জন্য দিরাই উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। মেয়েটির বিষপানের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে দিরাই হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখান থেকে ঝুমাকে আশংকাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফ উদ্দিন জানান, বিকাল সাড়ে চারটায় ওসমানী হাসপাতালের জরুরী বিভাগের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বিকালে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে দিরাই থানাকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সাইফুল আলম।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ঝুমার পরিবারের লোকজন জানান, দরিদ্র পরিবারের কর্তা নুর উদ্দিনের তিন সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে ঝুমা আক্তার ছোট বেলা থেকেই শান্ত স্বভাবের ও নিরিবিলি থাকতে অভ্যস্ত ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে কোন খাবার না খেয়ে সে বই পুস্তক নিয়ে বিদ্যালয়ে আসে। সকাল দশটায় ব্রজেন্দ্রগঞ্জ আরসি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসেম্বলি সমাবেশ শেষে একজন শিক্ষার্থী ঝুমাকে বমি করতে দেখে শিক্ষকদের অবগত করে। পরে প্রধান শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীরা এসে বিদ্যালয়ের সিঁড়িতে বসে ঝুমাকে বমি করতে দেখেন। তারা শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে তাকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় ইঁদুর মারার বিষ খেয়েছে। ঝুমার পিতা ঢাকা শহরে কাজে থাকায় তার মাকে খবর দেন শিক্ষকরা।
প্রধান শিক্ষক আশরাফ উদ্দিন জানান সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে যাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ ঝুমাকে অচেতন অবস্থায় দেখে কোন চিকিৎসা না দিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বিকেল সাড়ে চারটায় সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে পৌছালে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক ঝুমাকে মৃত ঘোষণা করেন।
দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সাইফুল আলম বলেন, সন্ধ্যার পর সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ আমাদেরকে মেয়েটি মারা যাওয়ার খবরটা জানানোর পর আমরা খোঁজখবর নিতে এলাকায় পুলিশ পাঠিয়েছি। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত বিষপানে নিহত ঝুমার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে জানিয়ে তার চাচা নুরুল ইসলাম বলেন আমার ভাতিজির আত্মহত্যার বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায় নি।