নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেট নগরীতে পুলিশের সাথে বিএনপি ও জামাত-ছাত্রশিবিরের সংঘর্ষে কোতোয়ালী থানার ওসিসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আজ রোববার (৮ জুলাই) বেলা আড়াইটার দিকে নগরীর কোর্ট পয়েন্ট সংলগ্ন মধুবন মার্কেটের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আহতরা নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিএনপি-ছাত্রদল ও জামাত-ছাত্রশিবির নেতাকর্মীরা তাদের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে আজ রোববার বিকেলে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি নগরীর কোর্টপয়েন্ট সংলগ্ন মধুবন মার্কেটের সামনে পৌছলে পুলিশ বাঁধা দেয়। এতে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পুলিশের উপর চড়াও হলে উভয়পক্ষে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে মিছিলকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে দেলোয়ার ও মহিবুর রহমান নামের দুই পুলিশ আহত হলে মিছিলকারীদের উপর পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ করে। তখন বিএনপি ও জামায়াত শিবির নেতাকর্মীরা পুলিশের উপর পাল্টা আক্রমন চালায় ও একটি গাড়ী ভাংচুর করে। অবস্থা বেগতিক দেখে পুলিশ টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলি নিক্ষেপ করলে এলাকাজুড়ে আতংক নেমে আসে। বিএনপি ও জামায়াত শিবির নেতাকর্মীরা পিছু হটলেও সংঘর্ষ চলতে থাকে। উভয়পক্ষের সংঘর্ষে বন্দরবাজার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
খবর পেয়ে কোতোয়ালী থানার ওসিসহ বিপুল পরিমাণ পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়ার চেষ্টা করে। তখন পুলিশ আবার টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলি নিক্ষেপ করলে বিএনপি ও জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে যায়। আহত ওসি ও পুলিশসহ অন্যান্যদের হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। আহতদের মধ্যে কয়েকজন পুলিশের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে। তবে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ১০ জনকে আটক করেছে। রক্তক্ষয়ী এ সংঘর্ষের ঘটনায় শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে মহানগর বিএনপি ও জামায়াত নেতৃবৃন্দ জানান, তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে কোন কারণ ছাড়াই পুলিশ হামলা চালিয়েছে। এতে তাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। মিছিল সমাবেশ যে কোন দলের গণতান্ত্রিক অধিকার হলেও পুলিশ আমাদের কর্মসূচী পালনে বাঁধা দিচ্ছে। পুলিশের এমন হামলায় আমরা ক্ষুব্ধ। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এদিকে কোতোয়ালী থানার এসআই মোঃ হাদিউল ইসলাম জানান, বিএনপি-ছাত্রদল ও জামাত-ছাত্রশিবিরের উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মীরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। এতে ওসিসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছেন। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এ পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অন্যান্যদের আটক করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে এবং মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। বিএনপি-জামায়াতের সব ধরনের নাশকতা এড়াতে শহরজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে জড়িতদের আটক করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
Leave a Reply