নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটে হঠাৎ পিয়াজের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ৫ দিনের ব্যবধানে এ পণ্যটি মূল্য মানভেদে কেজিপ্রতি বেড়েছে ১০-১২ টাকা। সিলেটের বাজারে বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। থেমে নেই আলুর দাম। তবে বড় ধরনের দামের ঊর্ধ্বগতির পর সয়াবিন তেল থমকে দাঁড়ালেও, চিনির দাম বাড়ছেই।
সাধারণ ক্রেতারা এ দাম বৃদ্ধির জন্য বরাবরের মতো ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে দায়ী করেছেন। এদিকে পিয়াজ ও আলুর দাম বৃদ্ধিতে সংক্ষুব্ধ হয়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পিয়াজ মানভেদে ব্যবসায়ীরা ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি করছেন। অথচ গত সপ্তাহে এ পণ্যটি সিলেটের বাজারে ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটে বর্তমানে আলু ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গেল সপ্তাহেও আলু ছিল ২৫-২৮ টাকা কেজি। ভোজ্য সয়াবিন তেল কেউ কেউ আগের দরে বিক্রি করলেও সরকার নির্ধারিত মূল্য ১৯৯ টাকার বেশিও নিচ্ছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। অপরদিকে চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।
নগরীর বন্দরবাজারের এক মুদি দোকানী জানান, প্রতি কেজি পিয়াজ তিনি ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি করছেন। দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে ক্ষেতে কৃষকের পিয়াজ পচে গেছে। হাটগুলোতে পিয়াজের আমদানি খুবই কম। যা আসছে তা ভাগ-ভাটোয়ারা করে ব্যবসায়ীরা নিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, যখন থেকে সরকার ভারত থেকে পিয়াজ আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে, তখন থেকে ধাপে ধাপে এ পণ্যটির দাম বাড়তে থাকে। কালিঘাট পাইকারী বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের এবার মূল্যায়ন করেনি। ভারতের পচা বীজ অর্থের লোভে কৃষকদের হাতে তুলে দিয়েছেন। আর এ বীজ বপন করে কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। বর্তমানে বাজারে যে পিয়াজ পাওয়া যাচ্ছে তা হলো ভারতীয় বীজের। পিয়াজটি দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায় না। করতে গেলে তা পচে যাচ্ছে। আর এ কারণে বাজারে এ পণ্যটির সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে ধাপে ধাপে দাম বাড়ছে পণ্যটির। একই বাজারের আলুর পাইকারি বিক্রেতা বলেন, ঈদের আগে এ পণ্যটির দাম প্রতি কেজি ২৪ টাকা ছিল। ঈদের আগের দিন রাত থেকে আলুর দাম ধাপে ধাপে বাড়তে থাকে। পাইকারি বাজারে তিনি প্রতি কেজি আলু ৩০ টাকায় বিক্রি করছেন। দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে তিনি বলেন, গেল বছর কৃষরা আলুর দাম তেমন পাননি। আলুও তেমন স্টোরেজ করেনি। যে যেমন পারছে সে তেমন ব্যবসা করছেন।
তবে সরেজমিনে ঘুরে বাজারে প্রায় প্রতিটি পাইকারী দোকানে পর্যাপ্ত আলু ও পিয়াজের মজুত দেখা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালিঘাটের এক শীর্ষ ব্যবসায়ী বলেন, দেশের মিল মালিকদের কারণে গত ২ মাস ধরে চিনির বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। ভারতে প্রতি কেজি চিনির দাম এখনো ৪৭ টাকা। একই পণ্য একই পরিমাণে আমাদের দেশে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। এটা দুঃখজনক ঘটনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বাজারের চিনির এক ব্যবসায়ী বলেন, রোজার পর ৫০ কেজির প্রতি বস্তায় ৬০০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। কর্তৃপক্ষের ব্যবসায়ী মনোভাবের কারণে চিনির দাম বেড়ে চলেছে। সরকারকে ভারত থেকে চিনি আমদানির আহ্বান জানান তিনি।
Leave a Reply