নোটিশ:
প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে, আগ্রহীগণ যোগাযোগ করুন!
শান্তিগঞ্জের নোয়াখালী সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় কমিটির নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ

শান্তিগঞ্জের নোয়াখালী সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় কমিটির নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ

ডেস্ক রিপোর্ট: সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জের নোয়াখালী সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদের নির্বাচনে জালিয়াতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার বগলারখাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. সাবাজ মিয়া। বুধবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদে এক ভোট বেশি পাওয়ায় প্রিসাইডিং অফিসার তাকে বিজয়ী ঘোষণার পরও জালিয়াতির মাধ্যমে তাকে পরাজিত দেখানো হয় উল্লেখ করে মো. সাবাজ মিয়া বলেন, আমাদের নোয়াখালী সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যে একটি অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি পদে নির্বাচনে আমি ভোটে বিজয়ী হয়েছিলাম। আমাকে বিজয়ী ঘোষণার পর জালিয়াতির মাধ্যমে আবার পরাজিত প্রার্থীকেও বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এবিষয়ে আমি সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিকট সকল ডকুমেন্টসহ লিখিত অভিযোগ দেই। আমাদের এলাকার কৃতি সন্তান, মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি মহোদয়ও যথাযথ তদন্ত শেষে বিহিত ব্যবস্হার জন্যে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেন।
কিন্তু পরিকল্পনা মন্ত্রীর নির্দেশনার পরও কোনো ধরণের নিয়মনীতি ছাড়াই সম্পূর্ণ অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে নোয়াখালী সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের পরাজিত প্রার্থীকেই সভাপতি হিসেবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, সকল ডকুমেন্টসহ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আবেদন করার পরেও সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীকে সভাপতি অনুমোদন দেয়া হয়। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নির্বাচন নিয়ে এমন জালিয়াতির ঘটনা শিক্ষাঙ্গনের জন্যে মারাত্মক হুমকি স্বরূপ উল্লেখ করে এই জালিয়াতির সাথে জড়িত সকলের শাস্তি দাবি করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, নোয়াখালী সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি নির্বাচন গত ৫ জুন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ৫ ভোট প্রাপ্ত হলে প্রিসাইডিং অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অশোক রঞ্জন পুরকায়স্থ আমাকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী খসরুজ্জামান পাভেল ৪ ভোট পেয়ে পরাজিত হন। আমাকে বিজয়ী ঘোষণার পরপরই স্থানীয় জয়কলস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত সুজন ভোট কেন্দ্রে জোরপূর্বক প্রবেশ করে আমার একটি ভোট বাতিল করান। এরপর দুই প্রার্থীর ভোট সমান সমান বলে লটারি করান। আমাদের তীব্র আপত্তির পরও পরাজিত প্রার্থী খসরুজ্জামান পাভেলকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। প্রিসাইডিং অফিসার ৯ টি ভোটের ব্যালট পেপার আমাদেরকে সত্যায়িত করে দিয়েছেন। ৯ টির মধ্যে তিনি কোনো ব্যালট বাতিল করেননি, বা বাতিল বলে স্বাক্ষরও করেননি। এবিষয়ে আমরা গত ৬ জুন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের নিকট লিখিত আবেদন করি। তিনি আবেদনের ব্যাপারে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দিতে সুনামগঞ্জ জেলার শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেন। একই বিষয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি ৭ জুন যথাযথ তদন্ত শেষে বিহিত ব্যবস্হার জন্যে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। বিষয়টির ব্যাপারে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের বেআইনি সিদ্ধান্ত না দিতে ১৩ জুন সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিকট পৃথক আবেদন করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও উল্লেখ করেন, তদন্ত শেষে সুনামগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম ১৫ জুন জেলা প্রশাসকের নিকট নোয়াখালী সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। ও তদন্ত প্রতিবেদনে আমার বিজয়ের বিষয়টি উল্লেখ করে এখানে অনিয়ম করে অন্যজনকে বিজয়ী দেখানো হয় বলে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনের “মতামত” তুলে ধরে বলা হয়, “তদন্তকালে প্রাপ্ত তথ্যাদি পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, জনাব খসরুজ্জামান পাভেল ৪ (চার) ভোট ও এবং জনাব মো. সাবাজ মিয়া ৫ (পাঁচ) ভোট পান।প্রিসাইডিং অফিসার কর্তৃক ১ টি ভোট বাতিলের সুনির্দিষ্ট কোন কারণ উল্লেখ করেননি। এমতাবস্থায় সভাপতি নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত জনাব মো. সাবাজ মিয়াকে সভাপতি হিসেবে বিজয়ী ঘোষণা করা যেতে পারে এবং বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ম্যানেজিং কমিটি অনুমোদন সংক্রান্ত কোন কার্যক্রম গ্রহণ না করার জন্য প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করা হলো”। জেলা শিক্ষা অফিসার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর আজ পর্যন্ত ওই তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখেনি বলেও অভিযোগ করেন সজিব মিয়া।
সাবাজ মিয়া আরও বলেন, এত জাল জালিয়াতির ঘটনা প্রমাণিত হওয়ার পরেও গত ২৭ জুন সম্পূর্ণ অবৈধভাবে সিলেট শিক্ষা বোর্ড সভাপতি অনুমোদন দেয়। বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মো. মঈনুল ইসলাম এর অনুমোদন দেন। এমনকি বোর্ডে জমা দেয়া রেজুলেশনেও অনেক চল-চাতুরী, মিথ্যার আশ্রয় নেয়া হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তাই এই জালিয়াতির সাথে জড়িত সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক, শান্তিগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত সুজনসহ সকলের শাস্তি দাবী করে এই অবৈধ কমিটি বাতিল করে নির্বাচনে বিজয়ী প্রার্থীকে দিয়ে কমিটি অনুমোদনের দাবী জানান তিনি। পাশাপাশি এ বিষয়ে তদন্ত করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.




© All rights reserved © 2022 Todaysylhet24.com
Desing & Developed BY DHAKATECH.NET