নিজস্ব প্রতিবেদক : বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রের ১ নম্বর কূপের পুনঃখননকাজ শুরু হয়েছে। কূপটি থেকে দৈনিক প্রায় ৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি দৈনিক প্রায় ৯৫ ব্যারেল জ্বালানি তেল উৎপাদনের কনডেনসেট পাওয়া যেতে পারে বলেও আশা করা হচ্ছে।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় উদ্বোধনের পর কূপের খননকাজ শুরু করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। এসময় সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. মিজানুর রহমান, বাপেক্সের পরিচালক মোহাম্মদ আলীসহ সিলেট গ্যাস ফিল্ডস ও বাপেক্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের আওতাধীন বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রে দুটি কূপ আছে। এর মধ্যে ১ নম্বর কূপ থেকে ১৯৯৯ সালে উৎপাদন শুরু হয়। ২০১৪ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। আবার ২০১৬ সালের শুরুর দিকে উৎপাদন শুরু হয়ে ওই বছরের শেষের দিকে বন্ধ হয়ে যায়। তখন কূপের ৩ হাজার ৪৫০ মিটার থেকে গ্যাস উৎপাদন করা হতো। পুনঃখননকাজের মাধ্যমে ৩ হাজার ২০০ মিটার থেকে গ্যাস উৎপাদনের সম্ভাবনা আছে। এ জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চালানো হয়। অন্যদিকে গ্যাসক্ষেত্রের ২ নম্বর কূপ থেকে প্রতিদিন ৭ থেকে সাড়ে ৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি বছরের নভেম্বর বা ডিসেম্বরের প্রথম দিকে খননকাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরপর গ্যাস জ্বালিয়ে পরীক্ষা করা হবে। তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন, কূপটি থেকে দৈনিক ৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করা হবে। সেই সঙ্গে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক জ্বালানি তেল উৎপাদনের কনডেনসেট পাওয়া যাবে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, কূপটি থেকে জ্বালানি তেলের জন্য দৈনিক ৯৫ ব্যারেল কনডেনসেট উৎপাদিত হবে। সেগুলো রশীদপুরে নিয়ে জ্বালানি তৈরি করা হবে। সেখান থেকে পেট্রল, অকটেন, ডিজেল ও কেরোসিন হবে। সিলেট গ্যাস ফিল্ডস, শেভরন থেকে উৎপাদিত গ্যাসের পাশাপাশি প্রতিদিন প্রায় ৪ হাজার ২০০ ব্যারেল কনডেনসেট উৎপাদিত হয়। সেগুলো থেকে প্রতিদিন প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে ৩ হাজার ৮০০ ব্যারেল জ্বালানি উৎপাদিত হয়।’
বাপেক্সের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিয়ানীবাজার ও পাশ্ববর্তী গোলাপগঞ্জ উপজেলায় একাধিক গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। এ কুপেও গ্যাসের মজুদ রয়েছে। আশা করছি খনন কাজে আমরা সফল হবো এবং গ্যাস পাওয়া যাবে।
গ্যাসের জন্য খ্যাতি রয়েছে সিলেটের। ১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান মিলে। এরপর আবিস্কৃত হয়েছে আরও বেশ ক’টি গ্যাসক্ষেত্র। দেশে বর্তমানে ২৮ টি আবিস্কৃত গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। এসব গ্যাসক্ষেত্রে প্রমাণিত মজুদের পরিমাণ ২১ দশমিক ৪ টিসিএফ, আরও ৬ টিসিএফ রয়েছে সম্ভাব্য মজুদ।
Leave a Reply