ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ বন্যার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। ঝুঁকিতে থাকা মানুষের সংখ্যার দিক থেকে নেদারল্যান্ড ছাড়া বাংলাদেশেরে চেয়ে আর কোনো দেশ এগিয়ে নেই।
বুধবার প্রকাশিত ‘পরিবর্তনশীল জলবায়ুতে বাংলাদেশে বন্যা মোকাবিলা’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন তৈরি করেছে ‘লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স অ্যান্ড পলিটিকাল সায়েন্স’র জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিষয়ক ‘গ্রন্থাম রিসার্চ ইনস্টিটিউট’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বেঙ্গল ডেল্টায় অবস্থিত বাংলাদেশে নিচু ও সমতল ভূমির কারণে বন্যার প্রবণতা বেশি। দেশটির অর্ধেকের বেশি মানুষ বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে।
অতিবৃষ্টি, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়াসহ জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত বেশ কিছু কারণে দেশে বন্যার ঝুঁকি বাড়ছে।
কার্যকর বন্যা-নীতির ওপর জোর দিয়ে বন্যা মোকাবিলার জন্য বিংশ শতাব্দীতে বাঁধ নির্মাণের মতো কাঠামোগত ব্যবস্থা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে কার্যকর বন্যা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় রয়েছে দুর্বলতা এবং স্থানীয় চাহিদা সম্পর্কে অপর্যাপ্ত জ্ঞান। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মতো স্থানীয় প্রতিষ্ঠানে সক্ষমতার অভাব ও বিনিয়োগের জন্য দুর্বল তহবিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্যা ও দুর্যোগের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন মূল্যায়ন, আরও বেশি সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ এবং সরকারী-বেসরকারি সংস্থার মধ্যে ভালো সমন্বয়। এতে বন্যার ঝুঁকি কিছুটা উন্নত করা যেতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বেড়ে যাওয়া নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে বন্যা সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত করছে বিশ্ববাসীকে। গতবছর বাংলাদেশের সিলেটে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা হয়। এতে সিলেটের প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা তলিয়ে যায় পানিতে। বন্যায় দু:স্বপ্নের একেবটা দিন পার করেন সিলেটের লাখ লাখ মানুষ। এবছর সিলেট না হলেও চট্রগ্রাম, বান্দরবন ও কক্সবাজারে ভয়াবহ বন্যায় পতিত হয়। এতে লাখো মানুষ দুর্বিষহ দিন পার করছেন। পানি কিছুটা চলে যাওয়ার পর ভেসে উঠছে বন্যার ভয়াবহ ক্ষতচিহ্ন। সম্প্রতি ভারত, চীন, জার্মানি ও বেলজিয়ামে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। বন্যায় সেখানে ক্ষয়ক্ষতি বেড়েছে। বিশেষ করে দেশগুলোর দরিদ্র জনগোষ্ঠী বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে, অপর এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে গত দুই দশকে বিশ্বব্যাপী বন্যার ঝুঁকিতে থাকা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলোয় বসবাসরত মানুষের সংখ্যা বেড়েছে ৮ কোটি ৬০ লাখ। স্যাটেলাইট তথ্যের ভিত্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান।
Leave a Reply