নোটিশ:
প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে, আগ্রহীগণ যোগাযোগ করুন!
ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১

ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ১

নিজস্ব প্রতিবেদক : এম.সি কলেজে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান চলাকালে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এক ছাত্র নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। নিহতের নাম সাইদুর রহমান (২৯)। সে এমসি কলেজের সাবেক ছাত্র , সিলেট মহানগর যুবলীগের সদস্য ও আজাদ গ্রুপের কর্মী বলে জানাগেছে। সে সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার নয়াগ্রামের রহিম উদ্দিনের পুত্র। এই ঘটনায় নিহতের বাবা রহিম উদ্দিন শাহপরান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে এমসি কলেজ প্রশাসনের উদ্যোগে বিজয় দিবসের আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়া নিয়ে স্থানীয় রঞ্জিত গ্রুপের জাহাঙ্গীর আলম ও আজাদ গ্রুপের ডায়মন্ডের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে সংঘর্ষ এমসি কলেজ ছাড়িয়ে টিলাগড় পয়েন্টে ছড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষের নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রের পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এসময় পুরো টিলাগড় ও এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষকরা নিরাপদ দুরত্বে চলে যান। ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে আজাদ গ্রুপের কর্মী ও সিলেট মহানগর যুবলীগ নেতা সাইদুর রহমান (২৯) গুলীবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এসময় রঞ্জিত গ্রুপের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় সাইদুর রহমানকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকগণ তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসমানী হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে রাতেই নিহতের লাশ তার গ্রামের বাড়ী সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার নয়াগ্রামে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
এদিকে সাইদুর নিহতের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত ৮টার সময় তার বাবা রহিম উদ্দিন বাদী হয়ে শাহপরান থানায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ২০জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৩৩, তারিখ: ১৭/১২/২১ইং।
মামলার আসামীরা হলেন-১। সিলেট সদর উপজেলার মেজরটিলা এলাকার ইকবাল হোসেনের পুত্র জাহাঙ্গীর (৩৫), ২। একই এলাকার শাকিল আহমদের পুত্র আব্দুল মান্নান (২৫) ও ৩। আব্দুল হান্নান (২৮), ৪। সদর উপজেলার সাহেবের বাজার এলাকার আশিক উদ্দিনের পুত্র আব্দুর রউফ (২৫), ৫। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বরইকান্দির মামুন মিয়ার পুত্র সজিব আহমদ (২৩), ৬। একই এলাকার আব্দুস শহীদের পুত্র মকসুদ আহমদ (২৫), ৭। গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাওয়ের আব্দুল হাকিমের পুত্র জসিম উদ্দিন (২৯), ৮। কানাইঘাট উপজেলার বানীগ্রামের বদরুজ্জামানের পুত্র রেজাউল করিম আরিফ (২৩), ৯। জৈন্তাপুর উপজেলার ফয়েজ আহমদের পুত্র মতিউর রহমান (২৫), ১০। একই এলাকার রাশিদ আলীর পুত্র মোঃ সাইফুর রহমান (২২), ১১। সদর উপজেলার নাথপাড়া গ্রামের নিতাই রায়ের পুত্র উজ্জল রায় (২৬), ১২। কসনক পালের পুত্র সেজ্যুতি পাল (২৫), ১৩। জকিগঞ্জ উপজেলার বারহাল গ্রামের ওসমান সামীর পুত্র আনসার সামী, ১৪। সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের হোসেন আহমদের পুত্র সোহেল আহমদ (২১), ১৫। একই উপজেলার আশারকান্দি গ্রামের নুরুল আমীনের পুত্র কবির আহমদ (২৩), ১৬। ছাতক উপজেলার জাউয়াবাজার এলাকার আলী হোসেনের পুত্র নাঈম আহমদ (২৮), ১৭। দিরাই উপজেলার পুকিডর গ্রামের চন্দন মিয়ার পুত্র এমরান আহমদ (৩০), ১৮। নগরীর শাপলাবাগ এলাকার রহমত মিয়ার পুত্র বুরহান উদ্দিন (৩০) ও ১৯। শাহরান গেইট এলাকার কামাল হোসেনের পুত্র মোহাম্মদ জাকারিয়া হোসেন। এছাড়া অজ্ঞাত আসামী হিসেবে রয়েছেন আরো ২০জন।
শাহপরান থানার ওসি মোশাররফ হোসেন খান বলেন, এমসি কলেজে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্থান্তর করা হয়েছে। ঘটনায় নিহতের বাবা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ আসামীদের গ্রেফতারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে।
এদিকে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন নিহতের ঘটনায় পুরো টিলাগড় এলাকা জুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকা জুড়ে বিপুল সংখ্যক দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সাইদুর রহমান নিহতের ঘটনায় আওয়ামীলীগ নেতা আজাদুর রহমান আজাদ ও এডভোকেট রঞ্জিত সরকারের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। দুজনই প্রতিপক্ষকে দায়ী করে বক্তব্য দিয়েছেন।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published.




© All rights reserved © 2022 Todaysylhet24.com
Desing & Developed BY DHAKATECH.NET