ডেস্ক রিপোর্ট : বিশ্বকাপ উদ্বোধনীতে মুসলিম অধ্যুষিত দেশটি ওয়েস্টার্ন কালচারকে অনুৎসাহিত করেছে। নানা সীমাবদ্ধতা ও ইউনিক আয়োজনে বিশ্বকাপের উদ্বোধন করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধন হলো এক শারীরিক প্রতিবন্ধীর হাত ধরে। অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ও হলিউড অভিনেতা মরগান ফ্রিম্যানের এক প্রশ্নের জবাবে পবিত্র কুরআন থেকে সূরা হুজুরাতের একটি আয়াত পড়ে শোনান গানিম আল মুফতাহ। যার অর্থ, ‘হে মানব আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পারো। নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে সেই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেজগার। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও সব কিছুর খবর রাখেন।’
এ সময়ের সবচেয়ে সার্থক বিজ্ঞানী স্টীফেন হকিং আর গনিম আল মুফতাহ। হকিং অবশ্য বেঁচে নেই। অঙ্গহানি নিয়ে জন্মেও নিজেকে প্রমাণ করা যায়। সেটাও এবার দেখিয়ে দিল কাতারের গানিম আল মুফতাহ। বয়স মাত্র ২০ বছর। কোমরের নিচ থেকে শরীরের অর্ধেক অংশই নেই।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, এ মুহূর্তে কাতারের সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত এবং বিখ্যাত একজন ব্যক্তি তিনি। কারণ তার হাত ধরেই বেজে উঠল ফিফা বিশ্বকাপের ২০২২ বাঁশি। আল বাইয়াত স্টেডিয়ামের এই অনুষ্ঠান উপভোগ করল গোটা বিশ্বের ফুটবল প্রেমী।
কোডাল রিগ্রেশন সিনড্রোম রোগে আক্রান্ত হয়ে জন্মের আগেই দুটো পা হারিয়ে ফেলেন গানিম। ৫ মে ২০০২ সালে পৃথিবীতে আসেন অর্ধেক শরীর নিয়ে। জন্মের আগে ডাক্তার গর্ভপাত করানোর কথা বললেও রাজি হননি তার মা ইমান-উল-আবদেলি এবং বাবা মুহাম্মদ-আল-মুফতাহ্। এটাকে মহান আল্লাহর সিদ্ধান্ত হিসেবে মেনে নিয়ে বিকলাঙ্গ সন্তানের জন্ম দিলেন। মা তার পিতার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি হবো সন্তানের বাম পা, আর তুমি হবে তার ডান পা। আমরা দুজনে সন্তানকে কখনো নিম্নাংশের অভাব টের পেতে দেব না।’ সেই গানিম বর্তমানে তিনি একজন বিশ্ববিখ্যাত মোটিভেশনাল স্পিকার। তার বক্তব্যের মাধ্যমে উজ্জীবিত, বর্ণময় হয়ে ওঠে হাজার বর্ণহীন জীবন।
তিনি প্রমাণ করে দিলেন যে, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সাফল্যের পথে কোনো অন্তরায় হয়ে উঠতে পারে না। প্রবল ইচ্ছা শক্তি আর পারপার্শ্বিক সহযোগিতাই মানুষকে অদম্য করে তোলে। কাতারের ২০ বছর বয়সী প্রতিবন্ধী যুবক আজ সে দেশের শান্তির দূত হিসেবে গোটা বিশ্ব দরবারে পৌঁছে গেছেন।
Leave a Reply