নিজস্ব প্রতিবেদক: নিজে থেকে আত্মগোপনে থাকা ভিকটিমকে ৬ মাস পর উদ্ধার করেছে পিবিআই সিলেট জেলা পুলিশ। উদ্ধারকৃতের নামা জুলমত আলী প্রকাশ লাছু মিয়া (৪৬)। তিনি ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ঘাটের বাজার, ঘিলাছড়া পূর্ব যুধিষ্টিরপুর গ্রামের মৃত মবশ্বও আলীর পুত্র। গত রোববার চট্টগ্রাম শহরের চকবাজার থানাস্থ বাকলিয়া ডিসি রোড সংলগ্ন চাঁন মিয়ার কলোনীর আমিনুর রহমানের বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ফেঞ্চুগঞ্জের মহিলা লিপি বেগম বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে অভিযোগ করেন যে, তার স্বামী চিংড়ি ব্যবসা করতেন। ঘটনার কিছু দিন পূর্ব হতে বিবাদী রুপই মিয়া, তখই মিয়া, জিলু মিয়া বাদীর স্বামীর নিকট ২লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না দিলে বিবাদীগণ নিজস্ব টর্চার সেলে নিয়ে নির্যাতন করবে। গত ০৫/১০/২০২১ তারিখে বিকাল ৪টার সময় বিবাদীগণ বাদীনির ঘরের সামনে এসে বাদীনির স্বামীকে গালিগালাজ, চাঁদা দাবি, মারপিট শ্লীলতাহানি, চুরি ও ভাংচুর করে ক্ষতি সাধন করে। বিবাদীগণ চলে যাবার সময় বাদীর স্বামীকে অপহরণ করে টর্চার সেলে নিয়ে যায়।
পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম. অতিঃ আইজি, বাংলাদেশ পুলিশের তত্ত্বাবধানে ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই সিলেট জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামানের নেতৃত্বে তদন্তে নামে পিবিআই। তদন্তকারী অফিসার এসআই শাহ মোঃ ফজলে আজিম পাটোয়ারী, মিনহাজুল, পিবিআই সিলেট জেলার চৌকশ দল গত ২৯/০৫/২০২২ ইং তারিখ চট্টগ্রাম শহরের চকবাজার থানাস্থ বাকলিয়া ডিসি রোড চাঁন মিয়ার কলোনী আমিনুর রহমান বাড়ি হতে চট্টগ্রাম পিবিআই টিমের সহায়তায় উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত ভিকটিমকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ভিকটিম জুলমত আলী প্রকাশ লাছু মিয়া ১০/১২ বছর পূর্বে দুবাই ছিলেন। দুবাই হতে এসে তিনি মাছ ধরার ছাই এর ব্যবসা করতেন। তিনি নরসিংদী দাউদকান্দির বাদশা মিয়ার নিকট হতে ৪০ টাকা দরে ছাই ক্রয় করে জাফলং, দিরাই, বালাগঞ্জ এলাকায় ৬০/৭০ টাকায় বিক্রি করতেন। বর্ষায় এই ব্যবসা করতেন। পরবর্তী সময়ে তিনি মাছের আড়ৎ থেকে মাছ এনে ভাটেরা বাজার, কুলাউড়ায় বিক্রি করতেন। মাঝে মধ্যে দোকান দিয়ে ছাই বিক্রি করতেন। ব্যবসা করার সময় তিনি রুপই মিয়ার নিকট হতে ৩০,০০০/-টাকা, তখই মিয়ার নিকট হতে ৯৫,০০০/-টাকা হাওলাত করেন। এছাড়া ফেঞ্চুগঞ্জের সাহেদা বেগম ১ লক্ষ টাকা কিস্তিতে তুলে ভিকটিমকে ব্যবসা করার জন্য দেয়। তিনি ঐ টাকাগুলো মৌখিকভাবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এনেছিলেন এবং কিছু টাকা ফেরত প্রদান করেন। তিনি সমস্ত টাকা দিতে না পারায় কাউকে কোন কিছু না বলে তার স্ত্রীর সাথে পরামর্শ করে ২ বছর পূর্বে বাড়ি হতে আত্মগোপনে চলে যান। তিনি চট্টগ্রামে গিয়ে রাজমিস্ত্রীর যোগালির কাজ করেন। ভিকটিম আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় মাঝে মধ্যে স্ত্রীর গোপনীয় মোবাইল নম্বরে ভিকটিম অন্যের ব্যবহৃত মোবাইল দ্বারা যোগাযোগ করতেন ও পরিবারের লোকজনের খোঁজ খবর নিতেন। ভিকটিমের স্ত্রী লিপি বেগম এলাকার সুনু মিয়া, আনোয়ার হোসেন এর পরামর্শে অপহরণ ও চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন।
Leave a Reply